১.
প্রতিচিন্তার এবারের সংখ্যাটিও সাজানো হয়েছে রাষ্ট্র ও সমাজসম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে। রাজনীতি অধ্যায়ে হোসেন জিল্লুর রহমান উপনিবেশোত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্রশক্তি, গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি আল মাসুদ হাসানউজ্জামান বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থায়ন প্রসঙ্গে মূল্যায়নধর্মী বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন। সমাজ অধ্যায়ে সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বাঙালির আত্মপরিচয়ের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে পাঠকদের সামনে সাম্প্রতিক কালে গণজাগরণ মঞ্চের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেছেন। মুহাম্মদ লুত্ফুল হক বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে বাঙালি পল্টনকে কেন্দ্র করে তত্কালীন নারীসমাজের অবস্থা কী ছিল তা তুলে এনেছেন। সাংস্কৃতিক পঠন অধ্যায়ে সুমন রহমান চটি বই নামক মুমূর্ষু শিল্পমাধ্যমটিকে ধরে শহরকেন্দ্রিক অল্পশিক্ষিত শ্রেণী, যাদের লেখক ‘মাঝারি’ গরিব বলে সংজ্ঞায়িত করেছেন, তাদের সাংস্কৃতিক অভিলাষকে শনাক্ত করার প্রচেষ্টা নিয়েছেন।
এবারের অনুস্মৃতি অধ্যায়ে সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আবু জাফর শামসুদ্দীনের সাক্ষাত্কারটি ছাপানো হলো। সাক্ষাত্কারটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের পক্ষে ১৯৮৫ সালে গ্রহণ করেছিলেন ড. সালাহউদ্দীন আহমদ ও ড. মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। এখানে আবু জাফর শামসুদ্দীনের সাংবাদিকতা জীবন, দেশভাগ ও তত্কালীন সমাজের চিত্র ফুটে উঠেছে।
বই আলোচনা অংশে এ কে খন্দকার, মঈদুল হাসান ও এস আর মির্জার বই মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর কথোপকথন আলোচনা করেছেন মুনির-উজ-জামান। আর ইফতেখার ইকবালের বই দ্য বেঙ্গল ডেল্টা: ইকোলজি, স্টেট অ্যান্ড সোশ্যাল চেঞ্জ, ১৮৪০-১৯৪৩ নিয়ে আলোচনা করেছেন আজিজুল রাসেল। ইতিহাসের আলোকে বই দুটিকে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে।
২.
ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য প্রতিচিন্তা একটি ইতিবাচক চিন্তার পাটাতন গড়ে তুলতে আগ্রহী। তাই আমরা মতবিনিময়, তর্ক-বিতর্ক ও ভিন্নপথ খোঁজার মতো পন্থাগুলোকে সব সময় উত্সাহিত করি। এই প্রেক্ষাপটে প্রতিচিন্তায় প্রকাশিত কোনো লেখার প্রতিক্রিয়া বা ভিন্নমত ছাপতে আমরা আগ্রহী।
৩.
প্রতিচিন্তার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উত্সাহ ও সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দিয়েছেন আমাদের বন্ধু ড. বিনায়ক সেন। তিনি বিগত চারটি সংখ্যায় শ্রম, মেধা ও তাঁর সার্বিক পরিকল্পনা প্রকাশ করে আমাদের কাজটিকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। সাম্প্রতিক কালে তিনি কিছুটা বড় ধরনের অসুস্থতায় পড়েছিলেন। এ ধরনের বড় অসুস্থতার পর তাঁর সার্বিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে প্রতিচিন্তার নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে তিনি অব্যাহতি চেয়েছেন। স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে তাঁর অব্যাহতির ব্যাপারটি আমরা মেনে নিয়েছি। বিনায়ক সেন আমাদের দীর্ঘদিনের জ্ঞানচর্চার সাথি। প্রতিচিন্তার নানা কাজে তাঁর সহযোগিতা আমরা পাব।
সামনের দিনগুলোতে প্রতিচিন্তা প্রকাশের জন্য আমাদের সব পাঠক, লেখক ও বন্ধুদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দরকার।
আশা করি, ভবিষ্যতে আপনাদের সবার সার্বিক সমর্থন পাব।